জনাব শিহাব একজন বৈমানিক। তিনি কম্পিউটার মেলা থেকে ১ টেরাবাইটের একটি হার্ডডিক্স কিনলেন। এটির আকার বেশ ছোট দেখে তিনি অবাক হলেন। প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় বিভিন্ন ডিভাইসের আকার ছোট হয়ে আসছে। বিমান চালনা প্রশিক্ষনের ব্যবস্থাতেও পরিবর্তন এসেছে। এখন সত্যিকারের বিমান ব্যবহার না করে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বিমান পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
ক. বিশ্বগ্রাম কী ?
খ. তথ্য যোগাযোগ প্রকুক্তি ব্যবহারে নৈতিকতা ব্যাখ্যা কর ।
গ. উদ্দিপকে ছোট আকারের হার্ডডিক্সের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধিতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে তার বর্ণনা দাও ।
ঘ. বিমান চালনা প্রশিক্ষণের ব্যবহৃত বর্তমান প্রযুক্তিটি নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে ব্যবহার যায় । ব্যাখ্যা কর।
প্রশ্নের সমাধান বা উত্তর
ক. বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষই একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে ।
খ. তথ্য যোগাযোগ প্রকুক্তির যেমন উপকারী দিক রয়েছে ঠিক তেমনি সমাজ ও জনগণের ওপর এর কিছু ক্ষতিকর প্রভাবও রয়েছে । অনেকেই তথ্য যোগাযোগ প্রকুক্তিকে অসৎ উপায়ে বা অবৈধভাবে ব্যবহার করে তথ্য চুরি বা বিকৃত করে অথবা সেগুলো প্রচার করে । এগুলো সবই নীতি বিরুদ্ধ কাজ যা তথ্য ব্যবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় । এসব নীতিবিরুদ্ধ কাজ পরিহার করে সঠিক নীতি ও আদর্শ অনুসরণ করে কম্পিউটার ইথিকস ইনস্টিটিউট এর দশটি নির্দেশনার সঠিক অনুসরণই হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের নৈতিকতা । তথ্য যোগাযোগ প্রকুক্তির নৈতিকতা যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাব্য ক্ষতি ও ঝুঁকি মূল্যায়নের সহায়ক হিসেবে কাজ করে ।
গ. উদ্দিপকে ছোট আকারের হার্ডডিক্সের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে যে প্রযুক্ত ব্যবহার করা হচ্ছে সে প্রযুক্তিটি হলো ন্যানোটেকনোলজি ।
ন্যানোটেকনোলজি হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে ন্যানো মিটার স্কেলে একটি বস্তুকে সুনিপুণভাবে ব্যবহার করা যায় । অর্থাৎ এর পরিবর্তন, পরিবর্ধন , ধংস বা সৃষ্টি করা যায় । সাধারনত ন্যানো প্রযুক্তি এমন সব কাঠামো নিয়ে কাজ করে যা অন্তত একটি মাত্রায় 100 ন্যানোমিটার থেকে ছোট ।ন্যানো প্রযুক্তি বহুমাত্রিক, এর সীমানা প্রচরলিত সেমিকন্ডাক্টর পদার্থবিদ্যা থেকে অত্যাধুনিক আণবিক স্বয়েং-সংশ্লেষণ প্রযুক্তি পর্যন্ত; আনবিক কাঠামো নিয়ন্ত্রন থেকে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ন্যানো পদার্থের উদ্ভাবন পর্যন্ত বিস্তত । ন্যানোটেকনোলজির ক্ষেত্রে দুটি প্রক্রিয়া আছে । একটি হলো উপর থেকে নিচে (top-down) ও অপরটি হলো নিচ থেকে উপরে (Botton-up) টপ-ডাউন পদ্ধতিতে কোনো জিনিসকে কেটে ছোট করে তাকে নির্দিষ্ট আকার দেওয়া হয় । এ ক্ষেত্রে সাধারণত Etching প্রক্রিয়াটি সম্পর্কিত । আর বটম-আপ হলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আকারের ছোট জিনিস দিয়ে বড় কোনো জিনিস তৈরি করা । আমাদের বর্তমান ইলেকট্রনিক্স হলো, টপ ডাউন প্রযুক্তি । আর ন্যানোটেকনোলজি হলো বটম-আপ প্রযুক্তি । ন্যানোটেকনোলজিতে ন্যানোমিটার স্কেলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তুর উপাদান দিয়ে তৈরি করা হবে বিভিন্ন প্রয়োজনিয় বস্তু ।
ঘ. উদ্দিপকে উল্লিখিত বিমান চালনা প্রশিক্ষনে ব্যবহিত বর্তমান প্রযুক্তিটি হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি । এটি মুলত কম্পিউটার প্রযুক্তি ও সিম্যুলেশন তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত । এর মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক ইমেজ তৈরি করে অতি অসম্ভব কাজও সম্ভব । নগদ পরিকল্পনার ক্ষেত্রেও ভার্চুয়াল রিয়েলেটি ব্যবহার করে একটি সুন্দর ও আধুনিক নগর গরে তোলা সম্ভব । নগর পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে – নগর উন্নয়ন রূপরেখা প্রণয়ন, নগর যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলা, স্থাপত্য ও নির্মান শিল্প ইত্যাদি । ত্রিমাত্রিক ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এর প্রয়োগ ঘটিয়ে এসব উন্নয়ন রূপরেখার পরিকল্পনা সহজেই প্রয়োগ করা যায় ।
নগর পরিকল্পনায় কোনো ভবন, শপিং কমপ্লেক্স, ফ্লাইওভার, ব্রীজ ইত্যাদি অবকাঠামো তৈরির পূর্বেই তার সিম্যুলেটেড সফট্ওয়্যার তৈরি করে বাস্তবে অবস্থা দেখা সম্ভব । এতে করে পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন অনেক সহজ হয় । মোটকথা ভর্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে সহজেই একটি পরিকল্পিত নগর গরে তোলা সম্ভব ।