সৃজনশীল প্রশ্ন ৪।আইসিটি নির্ভর ঙ্গান ও প্রযুক্তি মানুষকে নানা বিষয়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিচ্ছে।হাসান ICT বিষয়ে পড়াশুনা করে জানতে পারল কোনো প্রকার অস্ত্রোপাচার ছাড়া এক শৈল্য চিকিৎসা পদ্ধতি।পরবর্তীতে হাসান আইসিটি নির্ভর জীব বৈচিত্র সৃষ্টির প্রযুক্তি বিষয়ে ঙ্গান লাভ করে খুবই আনন্দিত হলো।
(ক) ন্যানোটেকনোলজি কী ?
(খ) ব্যক্তি শনাক্তকরণে প্রযুক্তিটি ব্যাখা কর।
(গ) হাসান এর চিকিৎসা পদ্ধতি শনাক্ত করে ব্যাখা কর।
(ঘ) উদ্দীপকে যে প্রযুক্তি হাসানের ঙ্গান লাভে আনন্দ দিল সেই প্রযুক্তি কৃষি সম্পদ উন্নয়নে কী ধরনের ভুমিকা রাখে মতামত দাও।
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর:
(ক) ন্যানোটেকনোলজি কী ?
উত্তর ক):ন্যানোটেকনোলজি হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে অণূ ও পরমাণুর স্কেল অর্থাৎ ন্যানো স্কেলে একটি বস্তুকে নিপুণভাবে ব্যাবহার করা যায় অর্থাৎ এর পরিবর্তন ,পরিবর্ধন, ধ্বংস বা সৃষ্টি করা যায়।
(খ) ব্যক্তি শনাক্তকরণে প্রযুক্তিটি ব্যাখা কর।
উত্তর খ):বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোন ব্যাক্তির দেহের গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্ঠের উপর বিত্তি করে তাকে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত করা হয়। কম্পিউটার বিঙ্গানে বায়োমেট্রিক্সের সাহায্যে মানবদেহের অদ্বিতীয় বৈশিষ্ঠ সনাক্ত এবং বিশ্লেষণ করা যায় ।এটি হলো মানুষের কিছু অঙ্গ -প্রতঙ্গ বা স্বভাব,গুনাগুন ব্যাবহার করে মানুষকে চিহ্নিত করা।বর্তমানে বক্তি শনাক্তকরণে এই প্রযুক্তি দারূণ জনপ্রিয় মাধ্যম।এটি ব্যক্তি শনাক্তকরণ এবং তার সত্যতা নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
(গ) হাসান এর চিকিৎসা পদ্ধতি শনাক্ত করে ব্যাখা কর।
উত্তর গ):হাসানের চিকিৎসা প্রযুক্তি হলো ক্রায়োসার্জারি।এই পদ্ধতিতে কোনো প্রকার অস্ত্রোপাচার ছাড়াই শৈল্য চিকিৎসা করা হয়।ক্রায়োসার্জারি হলো এমন এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি যা অত্যাধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে ত্বকের অস্বাভাবিক এবং রোগাক্রান্ত টিস্যুগুলোকে ধ্বংস করা হয়।অস্বাভাবিক টিস্যু ধ্বংস করতে নাইট্রোজেন গ্যাস বা আর্গন গ্যাস হতে উৎপাদিত চরম ঠান্ডা তরল বাহ্যিক ত্বকের চামড়ার চিকিৎসায় ব্যাবহৃত হয় যা ক্রায়োসার্জারি নামে পরিচিত।বিশেষত এক ধরনের চর্ম রোগের চিকিৎসায় ক্রায়োসার্জারি ব্যাবহার করা হয় ।সাধারণ টিউমারের ক্ষেত্রে -২০ থেকে -৩০ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড তাপমাত্রা ব্যাবহার করা হলেও ক্যান্সার বড় ও শক্ত কোষকলা ধ্বংসের ক্ষেত্রে -৪০ থেকে -৫০ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড তাপমাত্রা প্রয়োগ করা হয় ।আবার প্রোস্টেট ক্যান্সারের জন্য -১৪০ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড তাপমাত্রা প্রয়োগ করা হয় ।
বাহ্যিক টিউমারের ক্যান্সার কোষে সরাসার তরল নাইট্রোজেন একটি সুঁচ ,তুলা বা স্প্রে করা ক্রায়োগান যন্ত্রের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয় ।শরীরের অভ্যন্তরীণ টিউমারের চিকিৎসায় প্রোব বা ক্রায়োপ্রোব নামক একটি ফাাঁপা যন্ত্র দিয়ে তরল নাইট্রোজেন বা নিস্ক্রিয় গ্যাস টিউমারের সংস্পর্শে সঞ্চালন করা হয় ।ক্রায়োসার্জারিতে চিকিৎসক টিউমার টিস্যুর তাপমাত্রার হ্রাস -বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রন করতে পারেন ।ক্রায়োসার্জারির ক্ষেত্রে সাধারনত পৃথক পৃথকবাবে তরল নাইট্রোজেন,কার্বন ডাই অক্রাইডের তুষার,আর্গন এবং সমন্বিতভাবে ডাই-মিথাইল ইথার ও প্রোপেন এর মিশ্রন ব্যাবহার করা হয় ।
এভাবে ক্রায়োসার্জারি দ্বারা অস্ত্রোপাচার না করে শৈল্যচিকিৎসা করা হয় ।
(ঘ) উদ্দীপকে যে প্রযুক্তি হাসানের ঙ্গান লাভে আনন্দ দিল সেই প্রযুক্তি কৃষি সম্পদ উন্নয়নে কী ধরনের ভুমিকা রাখে মতামত দাও।
উত্তর ঘ):উদ্দীপকে জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি হাসানের ঙ্গানলাভে আনন্দ দেয়।
জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং হলো বায়োটেকনোলজির মাধ্যমে ডিএন এ এর প্রোটিনের পুনরায় স্বমন্বয় করে নতুন বৈশিষ্ঠের জীব তৈরীর প্রক্রিয়া।জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং মূলত কৃষিকে ঘিরেই বেশি পরিচালিত হচ্ছে।জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে কৃষিতে জেনেটিক্যালি মডিফাইড শস্য উৎপাদনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ৪ টি-
১.পরিবেশের বিভিন্ন ধরনের হূমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করা।
২.শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করা
৩.শস্যের গুনগত মান বৃদ্ধি করা ।
৪.শস্যের বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো।
এই পদ্ধতিতে DNA বা RNA থেকে বংশধারা রক্ষা করে এমন অংশগুলোকে বাদ দেয়া বা কোষের মধ্যে ঢুকানো হয়।কখনো কখনো একে জেনেটিক মোডিফিকেশন ও বলা হয় ।বায়োটেকনোলজির মাধ্যমে কোনো জীবের জিনোমকে নিজের সুবিধা অনুযায়ী সাজিয়ে নেয়াকেই জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বা জেনেটিক মডিফিকেশন বলে।জিনোম হলো কোনো জীবের বংশগত বৈশিষ্ঠের তথ্য।ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং ব্যাপকভাবে ব্যাবহৃত হচ্ছে।যেমন-সয়াবিন,ভুট্টা,তুলা,তেল বীজ, টমেটো,পেঁপে ইত্যাদীর জিন বৈশিষ্ঠ পরিবর্তন করে এগুরোর উৎপাদন বৃদ্ধি পোকামাকড় ও অন্যান্য উদ্ভিদনাশক ছত্রাক ও ভাইরাস প্রতিরোধ করা যাচ্ছে।জেনেটিক্যালি পরিকবর্তিত ফসল অধিক খরা ও ঠান্ডা সহ্য করতে পারব্অেধিক প্রোটিন ,অধিক ভিটামিন,অধিক লৌহ সমৃদ্ধ ফসলের গুনগত মান উন্নয়ন।ফসলের নতুন নতুন জাত এবং সুস্থ ও নীরোগ চারা উৎপাদনের মাধ্যমে জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং তথা জীব প্রযুক্তি কৃষিক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।