সৃজনশীল প্রশ্ন ২। নাঈম একদিন তার গভেষক মামার অফিসে গিয়ে দেকতে পেল যে, অফিসের কর্মকর্তাগণ মূল দরজার নির্ধারিত জায়গায় বৃদ্ধাঙ্গুল রাখতেই দরজা খুলে যাচ্ছে।সে আরো দেখতে পেল যে তার মামা গভেষনা কক্ষের বিশেষ স্থানে কিছুক্ষন তাকাতেই দরজা খুলে গেল। নাঈম তার মামার কাছে থেকে জানতে পারল যে, তিনি মিষ্টি টমেটো উৎপাদন নিয়ে গবেষনা করছেন।
ক)ই কমার্স কী ?
খ)নিম্নতাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখা কর ।
গ)মিষ্টি টমেটো উৎপাদনে নাঈমের মামার ব্যাবহৃত প্রযুক্তিটি বর্ণনা কর ।
ঘ)উদ্দীপকে দরজা খোলার প্রযুক্তিদ্বয়ের মধ্যে কোনটি বহূল ব্যাবহৃত বিশ্লেষণপূর্বক মতামত দাও।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর:
ক)ই কমার্স কী ?
উত্তর ক):ই-কমার্স পূর্ণরূপ হলো ইলেকট্রনিক্স কমার্স। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পণ্য ক্রয় -বিক্রয়, গ্রহন -বিলি করা, সেবা দান, মার্কেটিং, ব্যাবসা সংক্রান্ত লেনদেন ইত্যাদী করাই হচ্ছে ই-কমার্স। ই-কামার্স হলো অনলাইন সার্ভিস ও পণ্য কেনা-বেচার প্রক্রিয়া।
খ)নিম্নতাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখা কর ।
উত্তর খ):নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি বলতে অত্যাধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে ত্বকের অস্বাভাবিক ও রোগাক্রান্ত টিস্যু ধ্বংস করার প্রক্রিয়াকে বোঝায় । চিকিৎসা বিদ্যায় এই পদ্ধতিকে ক্রায়োসার্জারী বলে।সাধারণত এই চিকিৎসায় বরফশীতল তাপমাত্রায় দেহের কোষ কলার ভিতরে বল আকারের ছোট ছোট ক্রিস্টাল তৈরী হয়,যা কোষ কলাকে ধ্বংস করে।এই পদ্ধতিতে অস্বাবাবিক কোষ ধ্বংস করা হয়,ক্রায়োসার্জারীতে তরল নাইট্রোজেন,আরগণ,ড্রাই মিথাইল,ইথেন-প্রোপেন ব্যাবহার করা হয় ।এই পদ্ধতিতে কত তাপমাত্রা প্রয়োগ করতে হবে তা নির্ভর করে ক্ষতের অবস্থান আয়তন ও গভীরতার উপর।যেমন-টিউমারের ক্ষেত্রে (-২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি) এবং ক্যান্সারের ক্ষেত্রে (-৪০ ডিগ্রি থেকে -৫০ ড্রিগ্রি)তাপমাত্রা ব্যাবহার করা হয়।এভাবেই তাপমাত্রা কমিয়ে ক্যান্সারসহ জটিল রোগের চিকিৎসা করা হয়।
গ)মিষ্টি টমেটো উৎপাদনে নাঈমের মামার ব্যাবহৃত প্রযুক্তিটি বর্ণনা কর ।
উত্তর গ):উদ্দীপকে নাঈমের মামার মিষ্টি টমেটো উপাদানের প্রযুক্তিটি হচ্ছে জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বা কৃষিতে জৈব প্রযুক্তি।
জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং হলো বায়োটেকনোরজির মাধ্যমে ডিএনএ-এর প্রোটিনের পুনরায় সমন্বয় করে নতুন বৈশিষ্ঠের জীব তৈরীর প্রক্রিয়া।এই পদ্ধতিতে DNA বা RNA থেকে বংশধারা রক্ষা করে এমন অংশগুলোকে বাদ দেয়া বা কোষের মধ্যে ঢুকানো হয়।কখনো কখনো একে জেনেটিক মোডফিকেশনও বলা হয়।এটি প্রান রসায়নের এমন একটি শাখা সেখানে জীবনকে অণু পরমানু পর্যায়ে সঙ্গায়িত করা হয় ।বায়োটেকনোরজির মাধ্যমে কোনো জীবের জিনোমকে নিজের সুবিধা অনুযায়ী সাজিয়ে নেয়াকেই জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বা জেনেটিক মডিফিকেশন বলে।জিসোম হলো কোনো জীবের বংশগত বৈশিষ্ঠের তথ্য।
উদ্দপিকে নাঈমের মামা জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে মিষ্টি জাতের টমেটো উদ্বাভন করেন।এক্ষেত্রে তিনি সর্বোপ্রথম টমেটোর স্বাদ নির্ধারণকারী জিন শনাক্ত করেন।পরবর্তীতে টমেটোর স্বাদ নির্ধারণকারী জিন রেস্ট্রিকশন এনজাইমের মাধ্যমে কেটে আলাদা করেন।তারপর তাপ ও ইলেকট্রিক শক দিয়ে এ জিনের DNA কে একটি ব্যাকটেরিয়া কোষে ঢোকায়।এরপর মিষ্টি বৈশিষ্ঠের জন্য দায়ী জিনের DNA কে একটি ব্যাকটেরিয়ার রূপান্তরিত করেন।অত:পর সেই ব্যাকটেরিয়া সাধারণ টমেটোতে মিষ্টি বৈশিষ্ঠের জিনের সঞ্চার ঘটায়।ফলে উক্ত টমেটোর গাছে মিষ্টি জাতের টমেটোর উদ্ভাবন হয়।সুতরাং উদ্দীপকের নাঈমের মামা উপযুক্তভাবে মিষ্টি জাতের টমেটো উদ্ভাবন করেন।
ঘ)উদ্দীপকে দরজা খোলার প্রযুক্তিদ্বয়ের মধ্যে কোনটি বহূল ব্যাবহৃত বিশ্লেষণপূর্বক মতামত দাও।
উত্তর ঘ): উদ্দীপকে নাঈমের মামার গবেষনাগারে দরজা খোলার জন্য বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও চোকের রেটিনা ব্যাবহার করা হয়েছে।
উদ্দীপকে নাঈমের মামার গবেষনার দরজায় বৃদ্ধাঙ্গুল রাখতেই দরজা খুলে যায়,যেখানে ফিংগার প্রিন্ট পদ্ধতি ব্যাবহার করা হয়েছে।ফিংগারপ্রিন্ট পদ্ধতিতে বায়েমেট্রিক্স ডিভাইস ব্যাবহার করে আঙ্গুলের চাপের সাহায্যে একজন মানুষকে সহজে শনাক্ত করা যায়।একজন মানুষের আঙ্গুরের ছাপ অন্য মানুসের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা।ফিংগারপ্রিন্ট রিডার হচ্ছে এক ধরনের বায়োমেট্রিক ডিভাইস যার সাহায্যে অঙ্গুলের ছাপ ইনপুট হিসেবে গ্রহন করে কম্পিউটারের সফটওয়্যারের মাধ্যমে পূর্বে থেকে সংরক্ষিত ছাপের সাথে মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয়।যেখানে চোখের রেটিনা ব্যাবহার করা হয়েছে।রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতিতে চোখের মণিতে রক্তের লেয়ারের পরিমাণ পরিম্প করে মানুষকে সনাক্তকরণ করা হয়।আইরিস ও রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতিতে মানুষকে সনাক্তকরনের জন্য মাথা ও চোখকে স্থির নির্দিষ্ট ডিবাইসের সামনে দাড়াতে হয়।এই প্রযুক্তিদ্বয়ের মাধ্যে দ্বিতীয় পদ্ধতিটি ব্যাবহার করা হয় ।কারণ ঐ সকল প্রতিষ্ঠানে যত্রতত্র লোকের প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ থাকে এবং নিরাপত্তা ব্যাবস্থা জোরদার করা হয়।
এখানে নির্দিষ্ট সেন্সর কোড না থাকায় সকলে তখন দরজার সামনে দাঁড়ালেই দরজা স্বংয়ক্রিয়ভাবে খুলে যায়।ফিংগার প্রিন্টে এমন অবস্থা না থাকায় প্রত্যেকের নির্দিষ্ট হাতের অবস্থান রিডারে পাওয়ার পর তা সময় সাপেক্ষে কমান্ড একটি ভ্যাট করবে।এ কারনেই ফিংগার প্রিন্ট ব্যাবস্থায় দরজা খোলা বেশি নিরাপদ।ফিংগার প্রিন্ট ব্যাবস্থার খরচ তুলনামূলকভাবে কম,ব্যাক্তি সনাক্তকরনে কম সময় লাগে এবং সনাক্তকরনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রায় শতভাগ।অপরদিকে চোখের রেটিনা পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যায়বহূল এবং তুলনামূলকবাবে বেশি মেমরির প্রয়োজন হয়।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে,পিংগার প্রিন্টের মাধ্যমে যে দরজা খুরে যায় তার ব্যাবহার বহূল প্রচলিত এবং ব্যাবহৃত প্রযুক্তিদ্বয়ের মধ্যে বেশি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম।