নির্বাচন কমিশন ন্যাশনাল আইডি কার্ড তৈরি করার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের মুখমন্ডলের ছবি, আঙুলের ছাপ এবং সিগনেচার সংগ্রহ করে একটি চমৎকার ডাটাবেজ তৈরি করেছে। ইদানীং বাংলাদেশ পাসপোর্ট অফিস নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিয়ে উক্ত ডাটাবেজের সাহায্যে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট তৈরি করেছে। কিছু অসৎ ব্যক্তি নকল পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য উক্ত ডাটাবেজ হ্যাক করার চেষ্টা করে এবং পরিশেষে ব্যর্থ হয়।
ক. ভিডিও কনফারেন্সিং কী ?
খ. বিশেষ প্রযু্ক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইবিং প্রশিক্ষণ সম্ভব বুঝিয়ে লেখ।
গ. নির্বাচন কমিশন ডাটাবেজ তৈরি যে প্রযু্ক্তির সাহায্য নিয়েছিল তা উদ্দীপকে আলোকে বিশ্লেষণ কর।
ঘ. উদ্দীপকে কিছু ব্যক্তি ব্যর্থ চেষ্টার নৈতিকতার দিকগুলো ব্যাখ্যা কর।
ক. কমিউনিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই বা ততোধিক ভৌগোলিক অবস্থানে অডিও এবং ভিডিও এর যুগপৎ উভমুখী করার প্রক্রিয়াকে ভিডিও কনফারেন্সিং বলে।
খ. বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইবিং প্রশিক্ষণ সম্ভব এবং এ প্রযু্ক্তিটি হচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। এক্ষেত্রে কম্পিউটার সিম্যুলেশনের মাধ্যমে ড্রাইবিং প্রশিক্ষণেল জন্য চালককে একটি নিদিষ্ট আসনে বসতে হয়। চালকের মাথায় পরিহিত হেড মাউন্টেড ডিসপ্লের সাহায্যে কম্পিউটার দ্বারা সৃষ্ট যানবাহনের অভ্যন্তরীণ অংশ এবং আশপাশের রাস্তায় পরিবেশের একটি মডেল দেখানো হয়। এর সঙ্গে যুক্ত থাকে একটি হেড ট্র্যাকিং সিস্টেম । ফরে ব্যবহারকারী যানবাহনেরর অভ্যন্তরী ও বাহ্যিক অংশের ৩৬০ ডিগ্রি দর্শন লাভ করেন এবং কম্পিউটার সৃষ্ট পরিবেশের মগ্ন থেকে ড্রাইবিং প্রশিক্ষণ লাভ করেন।
গ. উদ্দীপকে বণনানুযায়ী নির্বাচন কমিশন ডটাবেজ তৈরিতে যে প্রযুক্তি সাহায্য নিয়েছিল তা হচ্ছে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি। বায়োমিট্রিক্স হচ্ছে এক ধরনের কৌশল যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক কাঠামো, আচার-আচারণ , বৈশিষ্ট্য গুনাগুন,ব্যক্তিত্ব প্রভুতি দ্বারা নিদিষ্ট্য ব্যক্তিকে চিহিৃতকরণ বা শনাক্তকরণ করা যায়। বায়োমেট্রিক্স আইডেন্টিফায়ার স্বাতন্ত্র্যসূচক ও নিরূপণযোগ্য বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে থাকে। উদ্দীপকে নির্বাচন কমিশন ডেটাবেজ তৈরিতে মুখমন্ডলের ছবি, আঙুলের ছাপ এবং সিগনেচার সংগ্রহ করার কাজটি নিম্মেরূপে সম্পন্ন করেছিলেন-
১। মুখমন্ডলের ছবি : এ ক্ষেত্রে পূর্ব হতে রক্ষিত স্যাম্পল মানের সাথে যার মুখমন্ডলের আকৃতি তুলনা করা হবে তার ছবি ক্যামেরার মাধ্যমে ধারণ করে তুলনা করা হয়। এ পদ্ধতি তে দুই চোখের মধ্যবর্তী দূরত্ব নাকের দৈর্ঘ্য এবং ব্যাস চোয়ালের কৌণিক পরিমান ইত্যাদি পরিমাপ করে তুলনা কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। সাধারনত আলোর তীব্রতার উপর শনাক্তকরণ সূক্ষতা নির্ভর করে।
২। আঙুলের ছাপ : এক্ষেত্রে নিদিষ্ট ব্যক্তির আঙুলের ছাপ পূর্ব হতেই আঙুলের ছাপ পড়তে পারে এমন মেশিনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার সাহায্য ডেটাবেজে সংরক্ষণ করে রাখতে হয়। পরবর্তীতে যখন একই ব্যক্তি ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডারে রাখে তখন যে আঙুলের ছাপের ছবি তৈরি হয় তা পূর্বে ডেটাবেজে রক্ষিত ছবির সাথে মিলিয়ে শনাক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়। এ ক্ষেত্রে মেশিনটি আঙুলের রেখার বিন্যাস , ত্বকের টিস্যু এবং ত্বকের নিচের রক্ত সঞ্চালনের উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপচিত্র তৈরি করে ।
৩। সিগনেচার : এ ক্ষেত্রে স্বাক্ষরের আকার, ধরণ, লেখার গতি, সময়, লেখার মাধ্যমে যেমন কলম, পেন্সিল চাপকে যাচাই করে শনাক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়।
ঘ. উদ্দীপকে কিছু অসৎ ব্যক্তির নকল পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য উক্ত ডাটাবেজ হ্যাক করার চেষ্টা করে এবং পরিশেষে ব্যর্থ হয়। এ হতে বুঝা যায় যে, তাদের মধ্যে নৈতিকতা অভাব ছিল। কম্পিউটার নৈতিকতা হচ্ছে নৈতিকতার ধারণা যা কম্পিউটার ব্যবহারের নৈতিকতা বিষয় সীমাবদ্ধতা এবং প্রতিরোধ করাকে বুঝায়। ১৯৯২ সারে কম্পিউটার ইথিকস ইনস্টিটিউট নৈতিকতার বিষয়ে যে ১০ টি নির্দেশনা তৈরি করেন তা নিচে উপস্থাপন করা হলো-
১। অন্যের ক্ষতি করার জন্য কম্পিউাটার ব্যবহার না করা ।
২। অন্য ব্যক্তির কম্পিউটারের কজের ওপর হস্তক্ষেপ না করা ।
৩। অন্য ব্যক্তির ফাইলসমূহ হতে গোপনে তথ্য সংগ্রহ না করা ।
৪। চুরির উদ্দেশ্যে কম্পিউটার ব্যবহার না করা।
৫। মিথ্যা সাক্ষ্য প্রমাণ বহনের জন্য কম্পিউটারকে ব্যবহার না করা ।
৬। যেসব সফটওয়্যারের জন্য অর্থ প্রদান করা হয়নি সেগুলো ব্যবহার বা কপি না করা ।
৭। অনুমতি ব্যতিরেকে অন্যের কম্পিউটার রির্সোস ব্যবহার না করা ।
৮। অন্যের বুুদ্ধিবৃত্তি সংক্রান্ত ফলাফলকে আত্নসাৎ না করা ।
৯। প্রোগ্রাম লিখার পূর্বে সমাজের ওপর তা কী ধরনের প্রভাব ফেলবে সেটি চিন্তা করা ।
১০। কম্পিউটারকে ওইসব উপায়ে ব্যবহার করা যেন তা বিচার বিবেচনা ও শদ্ধা প্রর্দশন করে ।